ভোটার আইডি কার্ড – জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করার নিয়ম ২০২৩
অনলাইন ভোটার আইডি কার্ড – জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করার সবচেয়ে সহজ নিয়ম এবং নিজেই নিজের NID Card Download পদ্ধতি জানতে পারবেন। ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র হচ্ছে একটি দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণ। ১৮+ বছর হলে প্রত্যেক নাগরিকের উচিত ভোটার আইডি কার্ড তৈরি কোরে নেওয়া এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জন করা। জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইনে এবং অফলাইনে এর মাধ্যমে তৈরি করা যায়। তাই আপনারা যারা ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করেছেন তাদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন কপি প্রয়োজন হতে পারে। আর এই অনলাইন কপি সংগ্রহ করার জন্য আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
কিন্তু কীভাবে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে ডাউনলোড করা হয়, তা অনেকে জানতে চান। আর সেজন্য আমরা আপনাদের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার উপায় নিয়ে এসেছি। যাতে করে আপনারা সঠিক নিয়মে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারেন। তবে এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে আমরা আপনাদের যে পদ্ধতিতে সেটি নির্বাচন কমিশন অফিসের কর্তৃপক্ষ হতে যে নিয়ম বা সেবা প্রদান করা হয়েছে আমরা ঠিক তাই আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। তবে নির্বাচন অফিস এ ধরনের পদ্ধতি গুলো যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে পদ্ধতি রয়েছে আমরা ঠিক সেই পদ্ধতিটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি। এবার বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ভোটার আইডি কার্ড ২০২৩
ভোটার আইডি কার্ড মূলত হচ্ছে একটি দেশের নাগরিকের নাগরিকত্বের প্রমাণ। প্রত্যেক দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণ প্রত্যেক নাগরিকের সংগ্রহ করা একান্ত কর্তব্য। তাই যখন নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছায় তখন প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ দায়িত্ব হতে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করা এবং যারা নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত রয়েছেন তাদের উচিত সকল ভোটারদের সাহায্য করা।
ভোটার আইডি কার্ড আপনারা দুইভাবে সংগ্রহ করতে পারবেন। এটি হচ্ছে আপনারা সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় অনুসারে ছবি তুলে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এবং অন্যটি হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করার পর এবং বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে যখন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি হয়ে যাবে তখন আপনাদের কাছে সরকার করতেই ভোটার আইডি কার্ড পৌঁছে দেয়া হবে। ( এক্ষেত্রে যারা অনলাইনে আবেদন করছেন তাদের জন্য)। কিন্তু অনলাইন কপি সংগ্রহ করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে নিতে হয়। আর সেই ডাউনলোড করার পদ্ধতি আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিব।
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য যা প্রয়োজন হবে
জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পূর্বে আপনাদের যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে সেগুলো হচ্ছে-
- আপনি যদি ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর অথবা আপনি যদি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে সে ক্ষেত্রে ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ নম্বর।
- জন্মতারিখ (ভোটার নিবন্ধনের সময় যে তারিখ উল্লেখ করা হয় অবশ্যই সেই তারিখ সংগ্রহ করতে হবে)।
- বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা ( বিশেষ করে যে বিভাগে অবস্থান করেন সে বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা)।
- যে মোবাইল নম্বর সচল সেই মোবাইল নম্বর।
- ফেইসবুক ফিকেশন করার জন্য একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ডাউনলোড করার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস ( কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ অথবা স্মার্টফোন)। এক্ষেত্রে আপনাদের যদি এই সকল ডিভাইস না থাকে তাহলে আপনারা কম্পিউটারের দোকানে অবস্থান করে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
সুতরাং আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার পূর্বে এ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অবশ্যই সংগ্রহ করে নিজেদের কাছে রাখবেন। এসব যদি আপনাদের না থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন না।
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার নিয়ম
বাংলাদেশের যে সকল নাগরিক নতুন ভোটার হয়েছেন বা কিছুদিন আগে ভোটার হয়েছেন কিন্তু জাতীয় পরিচয় পত্র পান নি, তবে আপনাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয় তাই আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এটি মূলত জাতীয় পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি বলা হয়। আর এই জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করার জন্য আপনাদেরকে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে এবং সেইসাথে নির্বাচন অফিসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আর যদি পূর্বে অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে আপনারা লগ ইন করার মাধ্যমে এ পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে পারেন।
আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন দুইভাবে। একটি হচ্ছে আপনারা মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করার মাধ্যমে ডাউনলোড করতে পারবেন এবং অন্যটি হচ্ছে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অবলম্বন করে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। নিম্নে তা বর্ণনা করে দেয়া হলো-
মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম হচ্ছে-
- প্রথমে আপনাদেরকে একটি এ স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে হবে।
- এরপর আপনাদের সেই ফোনে জিমেইল লগইন করে নিতে হবে।
- এরপর প্লে স্টোরে গিয়ে সার্চ অপশনে NID Wallet লিখে সার্চ করতে হবে।
- এখন ইনস্টল অপশনে ক্লিক করলে অ্যাপসটি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
- অ্যাপটি ডাউনলোড করার পর সেখানে লগইন করতে হবে। আর যদি পূর্বে একাউন্ট না থাকে তাহলে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
আপনাদের জন্য নিম্নে সম্পূর্ন প্রক্রিয়া দেয়া হলো-
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য রেজিস্ট্রেশন এবং লগইন
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য আপনাদেরকে সবার প্রথমে অ্যাপসের মাধ্যমে অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আর যদি আপনাদের পূর্বে কোন অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে সেই একাউন্টের তথ্য দিয়ে লগইন করে নিলেই হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া হচ্ছে-
- প্রথমে আপনাদেরকে অ্যাপস ওপেন করে নিতে হবে বা নির্বাচন কমিশন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন অফিসের ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক হচ্ছে- নির্বাচন কমিশন
- এরপর আপনাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ( যদি আপনাদের জাতীয় পরিচয় পত্র থাকে) অথবা আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করার সময় যে ফরম পূরণ করবেন সে ফ্রম মেয়ের নম্বর দিতে হবে।
- তারপর জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে হবে। ফরম পূরণ করার সময় বা জাতীয় পরিচয় পত্র জন্ম তারিখ রয়েছে সে জন্ম তারিখ।
- এখন আপনাদের সামনে একটি ক্যাপচা কোড আসবে সেই ক্যাপচা কোড লিখতে হবে।
- সবকিছু সম্পন্ন হলে সাবমিট করে দিতে হবে।
এভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং তাদের পূর্বের রেজিস্ট্রেশন করা আছে তারা লগইন করে নিতে হবে।
ঠিকানা প্রদান
এখন রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনাদের সামনে একটি পেজ আসবে এবং সেখানে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। নিম্নে তা দেখানো হলো-
- এরপর আপনাদের সামনে নতুন একটি ওয়েব পেজ আসবে। সেই ওয়েবপেজে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সঠিক ভাবে দিতে হবে।
- বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা দেয়ার পর পরবর্তী অপশনে ক্লিক করতে হবে।
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা দেয়ার পর আপনাদের কাছে মোবাইল নম্বর চাইবে সেই মোবাইল নম্বর দিতে হবে। তবে মোবাইল নম্বর দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে আপনারা যে মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করেন ঠিক সেই নম্বরটি দিতে হবে। মোবাইল নাম্বার দেয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ভেরিফিকেশন কোড যাবে সেই নাম্বারে। এখন ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে সাবমিট করতে হবে।
ভেরিফিকেশন কোড বসানোর পর বহাল অপশনে ক্লিক করতে হবে। আর এই বহাল অপশনের মাধ্যমে আপনারা পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন।
বারকোড স্ক্যান
যারা মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে অ্যাপটি ইনস্টল করে নিতে হবে এবং আপনারা যখন মোবাইল ভেরিফিকেশন করবেন তারপর আপনার দিকে একটি কিভাবে করতে হবে কিভাবে করে রেখে কিউআর কোড স্ক্যান করুন।
ফেস ভেরিফিকেশন
এখন আপনাকে কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে। কিউআর কোড স্ক্যান করার পর আপনাকে নির্দেশনা অনুসারে মাথার ডান পাশে এবং বাম পাশে ঘুরিয়ে আপনার ফেস স্ক্যান করে নিতে হবে।
পাসওয়ার্ড নির্ধারণ
ফেস ভেরিফিকেশন করার পর পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করে দিতে হবে। পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করে দেয়ার পর সেট পাসওয়ার্ড এ ক্লিক করতে হবে। যদি আপনি পাসওয়ার্ড এর ঝামেলায় না যেতে চান তাহলে আপনাকে এড়িয়ে যান অপশনে ক্লিক করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করার সিস্টেম
আপনারা যদি ইতিমধ্যে উপরের সকল তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে থাকেন তাহলে নিম্নের দেয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলে আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্রের pdf ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন। এখন আমাদের প্রয়োজন অনুসারে এই ফাইলটি প্রিন্ট করে যেকোনো স্থানে ব্যবহার করতে পারবেন।
সুতরাং আপনারা কম্পিউটার দোকানে যাওয়া ছাড়াই খুব সহজে নিজেরাই জাতীয় পরিচয় পত্রের ডাউনলোড করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার বিকল্প নিয়ম হচ্ছে- আপনার ওয়েবসাইট প্রবেশ না করে কম্পিউটার দোকানে গিয়ে সকল তথ্য দেয়ার পর জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
১. ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখব?
উত্তরঃ আপনাদের কাছে যদি ভোটার আইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ডের নিবন্ধন ফরমের নম্বর থাকে তাহলে আপনারা ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন এর মাধ্যমে দেখতে পারবেন।
২. ভোটার নিবন্ধনের স্লিপ হারিয়ে গিয়েছে এখন করনীয় কি?
উত্তরঃ ভোটার নিবন্ধন স্লিপ যদি হারিয়ে যায় তাহলে আপনাদের নিকটস্থ জেলার থানা তে গিয়ে জিডি করতে হবে এবং জিডি করার সময় জিডি কপি সংগ্রহ করে নিতে হবে।
৩. নতুন ভোটার হলে এনআইডি কার্ড কবে পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ যারা নতুন ভোটার হবেন তারা এনআইডি কবে পাবেন সেটি নির্বাচন কমিশন অফিসের কতৃপক্ষ জানিয়ে দিবেন।
৪. জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার জন্য কখন আবেদন করতে হয়?
উত্তরঃ জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার জন্য ১৮+ বছর হলে আবেদন করতে পারবেন।
৫. ভোটার আইডি কার্ড যদি হারিয়ে যায় তাহলে করনীয় কি?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ড যদি হারিয়ে যায় তাহলে আপনাদের নিকটস্থ জেলার থানা তে গিয়ে জিডি করতে হবে এবং জিডির মূল কপি সংগ্রহ করে অনলাইনে রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করে নিতে হবে।
আপনারা যারা ইতিমধ্যে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারছেন না তারা আশা করছি আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে ডাউনলোড করে তার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনারা যখন ভোটার আইডি কার্ড এর তথ্য ডাউনলোড করবেন তখন যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে ১০৫ নম্বরে কল করে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা হলে আপনারা আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন অথবা আরও কোন তথ্য জানতে চাইলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।